রংপুরে জ্বর-সর্দি, হাঁচি-কাশিসহ করোনার উগসর্গ লক্ষ্যনীয়, দাম বেড়েছে কিছু ওষুধের

আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৪৮ অপরাহ্ন, ০৪ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ৫:৪৮ অপরাহ্ন, ০৪ জুলাই ২০২১

রংপুরে জ্বর-সর্দি, হাঁচি-কাশিসহ করোনার উগসর্গ লক্ষ্যনীয় মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কেউ না কেউ এসব অসুখে ভুগছে। ফলে অসাধু ঔষুধ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট বাড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্যারাসিটামলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ঔষধের দাম। বিক্রেতারা বলছে বর্তমানে চাহিদা বেশি থাকায় পর্যাপ্ত যোগান নেই সব এই নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধের, ফলে বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে, তাই তারা ক্রেতার কাছ থেকেও নিচ্ছে চড়া দাম। 

সারাদেশে করোনার তৃতীয় দফায় যখন রংপুরে ভয়াবাহ রুপ নেওয়ার উপক্রম হয়েছে, প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার। ঠিক তখনই এমন দেশদ্রোহী অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এরুপ অমানবিক কার্যক্রম চালিয়ে বিপদে ফেলছে রোগীর স্বজনদের। গত দুই সপ্তাহ জুড়ে রংপুর জ¦র-সর্দি, হাঁচি-কাশি ও ব্যাথাসহ করোনার বেশ কিছু উপসর্গ হঠাৎ করে বেড়েই চলেছে। এদের বেশির ভাগের লক্ষণ ভারতীয় ভ্যারিয়ান্টের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বেশ উদ্বিগ্ন- উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে গোটা রংপুরবাসী, তবে ঘরে থেকে সঠিক বিধি নিষেধ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ।

কিন্তু একথাও ঠিক যে শুধু করোনা নয় আবহাওয়ার পরিবর্তনেরও কিছুটা প্রভাব পরছে জনজীবনে। যার দুরুণ ঋতু পরিবর্তন কালীন এসব রোগ কিছুটা দেখা দিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে রংপুর বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলা-উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে সহজে মিলছে না কাশি-হাঁচি ও জ্বর-সর্দি নিরাময়ের ওষুধ। পূর্বের তুলনায় চাহিদা বাড়ায় অনেক ফার্মেসিতে জি-ম্যাক্স, এইচ, এইচআর, নাপা, নাপা এক্সটেনসহ প্যারাসিটামল গ্রুপের বেশ কিছু ঔষুধের সংকট রয়েছে। তবে চাহিদার অজুহাতে দামও বাড়িয়েছেন ফার্মেসির মালিকরা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এই সব ঔষধ। আবার কোথাও বিক্রেতা কৃর্তক কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ মিলছে ঔষুধ ব্যবসায়দের বিরুদ্ধে। 

ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেছে- করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় লাভের আশায় ঔষুধ বিক্রেতারা এই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছেন। তারা বলেন- বিশেষ করে নাপা ট্যাবলেট, নাপা সিরাপ, এইচ ট্যাবলেট ও এইচ সিরাপের চাহিদা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তাই গত  কয়েক দিন ধরে প্রতি পাতা নাপা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা পূর্বে আট টাকা প্রতি পাতা ছিল। এ ছাড়া অন্যান্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের দাম বাড়েনি। নাপা এক্সটেন প্রতি পাতা ১৫ টাকা, জি-ম্যাক্স প্রতি পাতা ১১০, এইচ প্লাস ২৪ টাকা পাতা বিক্রি হচ্ছে।

ঔষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে কথা হলে রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা, জানান- বর্তমান সময়ে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকট খুবই উদ্বেগজনক। আমরা বর্তমান সময়ে নিয়মিতভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছি, যা চলমান থাকবে। করোনা অতিমারী এ ভয়াবাহ দুর্যোগের সময় কেউ যদি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের এমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দাম নেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ পেলে প্রয়োজনে অভিযান পরিচালনা করা হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম, করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, নিজে নিরাপদে থেকে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন ।