মহাসড়কে ডাকাতি ও পৃথক দুটি মামলায় ৯ ডাকাত গ্রেফতার

আল কাদরি কিবরিয়া সবুজ, (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
আল কাদরি কিবরিয়া সবুজ, (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি আল কাদরি কিবরিয়া সবুজ, (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:০০ পূর্বাহ্ন, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১১:২১ পূর্বাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের নৈশকোচ ডাকাতিসহ চালক খুনের ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় ১টি ও সাদুল্লাপুর থানায় ১টি মামলা দায়ের হলে ডিপজল এন্টারপ্রাইজ ডাকাতির ঘটনায় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা, ধাপেরহাট পুলিশ,তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সেরাজুল হক আরও এক ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা কদমতলী এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য আলমগীর ওরফে আলম ফকির (৪৫) কে গ্রেফতার করেন। এবং ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। গ্রেফতারকৃত ডাকাত আলমগীর বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ এলাকার মৃত ছোটন ফকিরের ছেলে বলে জানা গেছে।

এ নিয়ে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ২টি মামলায় ৯ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। ডাকাতির মুল পরিকল্পনা কারী ও গাড়ি চালকসহ র‌্যাব-১ ও ১৩ এর একটি আভিধানিক দল রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী থানা এলাকা থেকে মোট ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন। একই সঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৬টি ছুরি ৫টি মোবাইল ফোন, ডাকাতির আলামতসহ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উৎঘাটন করেছেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর কাওরান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের মিডিয়া উয়িং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলন করে জানান, এ ডাকাত চক্র গত ৮ মাসে ঢাকা হতে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী ৮টি নৈশকোচের ডাকাতী সংঘটিত করেছেন। ডাকাতের কবলে পড়া নৈশকোচ গুলি হলো, স্পেশাল সার্ভিস, শঠিবাড়ী স্পেশাল, সৈকত পরিবন, শ্যামলী পরিবহন, জায়দা পরিবহন, ডিপজল এবং সর্বশেষ হানিফ এন্টার প্রাইজ সহ ৭-৮টি নৈশকোচ ডাকাতি করেছেন তারা। হানিফ গাড়ী ডাকাতিকালীন এই ছদ্দবেশী ডাকাতরা যাত্রী সেজে গাড়ীতে ওঠে। পথিমধ্যে পীরগঞ্জের থানা সীমানায় এসে অস্তের মুখে চালককে জিম্মি করে গাড়ীর নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়। ডাকাতির সময় ছুরিকাঘাতে চালক মনজুরকে গুরত্বর আহত করে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে পলাশবাড়ী হাসপাতালে আহত চালককে ভর্তি করালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চালক মনজুর মৃত্যু বরণ করে।

এ নিয়ে বাসের সুপার ভাইজার পাইমুল ইসলাম বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরাধী চক্রকে ধরতে মাঠে নামেন র‌্যাব-১ এর সদস্যরা দ্রুত ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ৬ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ডাকাতের মুল হোতা ও পরিকল্পনাকারী গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহেশপুর গ্রামের নয়ন চন্দ্র (৩২), সাদুল্লাপুরের ইদিলপুরের চকনদী গ্রামের ড্রাইভার রিয়াজুল ইসলাম লালু (২২), মহেশপুরের এলাকার শাকিল মিয়া (২৫), ফিরোজ কবির (২০), আবু সাঈদ মোল্লা (২৫)।

অপরদিকে ডিপজল পরিবহন ডাকাতির ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী অন্তর নামক এক যুবক সাদুল্লাপুর থানায় ডাকাতির মামলা দায়ের করলে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় তিন ডাকাত। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রংপুর জেলার পীরগঞ্জের জয়পুর গ্রামের মেহেদী (২৫), পলাশবাড়ী উপজেলার ভগবানপুর গ্রামের পাপুল (২৪) এবং সর্বশেষ ঢাকা কদমতলী এলাকা হতে আলমগীর ওরফে আলম ফকির (৪৫) কে গ্রেফতার করেন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সেরাজুল হক।

গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা র‌্যাবের কাছে ডাকাতির ঘটনা স্বীকার করেছেন এবং এ ডাকাতের সংঘবদ্ধ সদস্য ১০-১২ জন বলে জানিয়েছেন। সংঘবদ্ধ ডাকাতরা দির্ঘদিন থেকেই এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছে এবং তাদের বয়স প্রায় সকলের ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। আইনের ফাঁকে স্বাক্ষী প্রমাণে কেই সাজা খাটবেন আবার কেই নির্দোষে খালাশও হতে পারে। কিন্তু নিজের জীবন বাজি রেখে যাত্রীতের জান মাল রক্ষার জন্য যে চালক মঞ্জুর হোসেন জীবন দিলেন, কেউ কি তার পরিবারের খবর রাখছে।