পত্নীতলায় আমণের বাম্পার ফলন

মাসুদ রানা, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
মাসুদ রানা, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি মাসুদ রানা, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ন, ২৫ নভেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১২:২৪ অপরাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

শস্য ভান্ডার খ্যাত জেলার উত্তর - পশ্চিমে  ভারতের সীমান্ত ঘেসা বরেন্দ্র জনপদ পত্নীতলা উপজেলায়  এবার রোপা আমণ  ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় ভাল ফলন  ও  দাম পেয়ে খুশি কৃষককূল। 

সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়েনের সর্বত্র এখন মাঠে  মাঠে কৃষকের। সোনালী স্বপ্ন  আমণ ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক শ্রমিকেরা বসে নেই কৃষানীরাও। চলছে ঘরে ঘরে নব্বানের উৎসব, কৃষকরা তাঁদের স্বপ্নের সোনালী  ফসল ঘরে তুলতে উঠে-পড়ে লেগেছে। কৃষকরা জানায় এবার আমণ চাষে সার কীটনাশক শ্রমিক হালচাষ সময়মতো কাজে লাগাতে পেরে এবং পরিচর্যা করতে পেরে  ধানের আবাদ ভালো হয়েছে, পানির সঙ্কট হয়নি। তবে অনেক কৃষক জানিয়েছেন এবার ধানের রোগ বালাই দমনে তাঁদের অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। এতে প্রতিটি কৃষকের মোটা অংকের বাঁকী হয়েছে কীটনাশকের দোকানগুলোতে। নতুন ধান ঘরে তুলে ঋণ মহাজন পরিশোধ করবেন বলে জানায় কৃষকরা। 

উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের নাদৌড়  গ্রামের কৃষক উম্মত,সুকুমল, সামসদ্দীন, হাবিবুর সহ অনেকেই জানান প্রতি বিঘায় ৫১ জাতের ধান ১৮ থেকে ২৩ মণ পর্যন্ত তবে বেশীরভাগ কৃষকের  ১৪ হতে ২০ মণ ফলন হয়েছে।    

পাটিচরা ইউনিয়েন কৃষক বিঞ্চু পদ, শাহাজাহান আলী, হারুনুর রশীদ, নজিপুরের শিতেন চন্দ্র কৃষ্ণপুরের হবিবর রহমান সহ অনেকে বলেছেন ওই সব মহাজনি ঋণ এর কথা। চলতি মওসুমে প্রতি বিঘায় ১৬ হতে ২০ মন পর্যন্ত ধানের ফলন পাচ্ছেন কৃষকেরা। স্থানীয় আড়ৎগুলোতে প্রতিমন ধান ১ হাজার হতে ১১শ টাকায় ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। কৃষকরা ধান বিক্রয় করে মহাজনি ঋণ পরিশোধ করে বোরোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে। এদিকে তেলের ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হওয়াই আগামী বোরো মৌসুমে জমি চাষ ও সেচ মূল্য বৃদ্ধির শঙ্কায় আছেন তারা। 

প্রতিবিঘা ধান কাটার খরচ চুক্তিতে ১৬শ থেকে ২হাজার, খুচরা রোজ নারী শ্রমিক ২৫০ টাকা পুরুষ ৩শ -৪শ টাকা এছাড়া জমি হতে ধান বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া ট্রলি বা ভ্যান খরচ, মাড়ায় খরচ। 

পত্নীতলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি মওসুমে ২৮ হাজার ২শ ৫৬ হে.ক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ২৭ হাজার ২শত হেক্টর। উপজেলার ১ হাজার হে.ক্টর জমি আমবাগান তৈরি হয়েছে। জমি কম হলেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৪হাজার ৪৪০ মেট্রিক টন । অতিরিক্ত উৎপাদন বেড়েছে আরো ৯৫হাজার মেট্রিক টন। পত্নীতলায় ব্রি ধান ৩৪, ৪,  ৫১, ৫২, ৬২, ৭২, ৭৪ স্বর্ণা ৫ ও দেশীয় চিনি আতব চাষ করেছেন কৃষকেরা। পত্নীতলায় শতকরা ৬০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই হয়েছে। আশা করা যায়এক সপ্তাহ ১০ দিনের মধ্যে কাটা শেষ হতে পারে 

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, কৃষকরা সময় মতো সার বীজ কীটনাশক ও কৃষি সহযোগীতা পেয়ে ধানের উৎপাদন বেড়েছে। রবিশস্য মৌসুমের জন্য ৪ হাজার ৯শত জন কৃষক কে  গম, ভূট্টা,সরিষা,সয়াবিন, কালায়, পেঁয়াজ, বাদাম সহ ইত্যাদি বীজ ও সার  বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের পাশে আছে।