তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের নির্দেশ শুনে রংপুরে মিষ্টি বিতরণ করেছেন জাপা নেতাকর্মীরা

আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন খবর পাওয়া মাত্রই রংপুরে আনন্দিত জাতীয়পার্টি ও তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস করেছেন।

গত সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীরা  সাধারণ মানুষের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছেন এসময় নেতাকর্মীরা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। 

উক্ত সময় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জানান তাদের দাবী দেরিতে হলেও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের মতো জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও তার এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। তবে শুধু পদত্যাগ নয়, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেও সরকারের প্রতি আহ্বান রংপুরস্থ জাপা নেতাদের।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর বলেন- প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ করেছে। অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও বিতর্কিত মন্তব্য করতে গিয়ে কাউকে বাদ রাখেনি। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, সংবিধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়েও আজেবাজে কথা বলেছেন। আমরা তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ দাবি করে রাজপথে মিছিল করেছিলাম। দেরিতে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই।

তিনি আরও বলেন, পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়, দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা ফিরিয়ে আনতে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। 

রংপুর মহানগর জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি মো. শাহিন হোসেন জাকির বলেন- দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এমন উদ্ভট তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আগে ছিল বলে মনে হয় না। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে যেভাবে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে চলেছেন, তা সত্যিই লজ্জাজনক। সব দল ও মতের মানুষকে তিনি আঘাত করেছেন, জাতির কাছে তার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটিকে সাধারণ মানুষের মতো আমরাও সাধুবাদ জানাচ্ছি।

এদিকে দলকে বিতর্কের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ায় জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সন্তোষ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায়-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ভেতর-বাইরে আলোচনা-সমালোচনায় ঝড় তুলে। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে। এসবের জেরে সোমবার রাতে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর দল-মত নির্বিশেষে সকল পেশাজীবি শ্রেণীর মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।