এই সময়ের ব্যস্ত অভিনেতা 'হাসো' যেতে চান অনেক দূর

মাসুদ রানা,পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
মাসুদ রানা,পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি মাসুদ রানা,পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ন, ১১ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১২:০৪ অপরাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

বাবা মায়ের দেওয়া নাম এমরান হোসেন।বাড়ী নওগাঁ পত্নীতলার শিহাড়া ইউনিয়নে   প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান এমরান ছোট বেলা থেকেই গ্রামবাসীর মধ্যে নিজের অভিনয় ও কৌতুকের জন্য পরিচিতি লাভ করেন। বন্ধুদের বাহবা আর পরিবারের উৎসাহে পড়াশোনার পাশাপাশি সুযোগ খোঁজেন মিডিয়ায় কাজ করার। যদিও বাবার ইচ্ছা সন্তান লেখাপড়া শিখে একজন আইনজীবী হিসেবে গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াবে। পিতামাতার বড় সন্তান এমরান সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। এসবের মধ্যে অভিনয়টাকেও আর নেশা নয় পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু বাস্তবে হয়েছেন অভিনেতা।   অভিনয় দিয়ে পরিচালক-কুশলীদের হাসাতে পারেন বলে নামের পাশে ‘হাসো’ যোগ করে দিয়েছেন। মিডিয়া পাড়ায় এখন এ নামেই অর্থাৎ ‘ইমরান হাসো’ নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন। প্রতিষ্ঠা পাবার আশায় প্রতিমূর্তে সংগ্রামরত এই উঠতি তরুনের ১১ ডিসেম্বর শনিবার জন্মদিন।

যেহেতু সেলিব্রেটি তকমা এখনো লাগেনি; তাই ওতো ঘটা করে জন্মের বিশেষ দিনটাকে খবর করার ক্ষেত্রে আপত্তি থাকলেও, তৃষ্ণা রয়েছে। বিচার বিশ্লেষণে তার সেই তৃষ্ণায় খানিকটা জল ঢেলে দিলে অভিনয়ের ইচ্ছাটা গাঢ় হবে। কে জানে সিরিয়াসনেস ভাবটা বিদ্যমান থাকলে একজন খান জয়নুল, টেলি সামাদ, দিলদার হতে পারে এই ‘হাসো’। অবশ্য তার ভাষ্য- ‘আমি অভিনেতা হতে চাই, একজন সিরিয়াস অভিনেতা’।  

সমস্যা হচ্ছে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে ‘হাসো’ বলেন, বাবার আদেশ পালনে আমি বদ্ধপরিকর তেমনি মনের খোরাকের জন্য অভিনয়টাকে আড়াল করতে পারি না। একটু কষ্ট হয় কিন্তু দুটো কাজই ভালোয় ভালোয় সম্পন্ন করতে হবে বলে পরিশ্রান্ত হই না। বরং ভালোই সামাল দিচ্ছি। 

বিভিন্ন পোশাকী চরিত্রে ইমরান হাসো তিনি জানান, গ্রামে থাকাকালীন স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে একক অভিনয় এবং কমেডির জন্য প্রথম পুরস্কারটা আমার জন্য মোটামুটি বরাদ্দ হয়ে থাকতো। এরপর আন্ত স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ হয়েছি বিভাগীয় পর্যায়ে। ঢাকায় এসে কলেজেও এই ধারা অব্যাহত রেখেছি। তাই স্যারেরা পরামর্শ দিতেন তুমি অভিনয়টা সিরিয়াস নাও, ভালো করতে পারবে।

তাদের এমন পরামর্শে ২০১৫ সালে এনটিভিতে হা-শো রিয়েলিটি শোতে অডিশন দেই এবং সেরা ৪০ জনের মধ্যে আমিও একজন হই। নিজের খামখেয়ালীর কারণে সে যাত্রায় এগুতে পারিনি। আর তখন থেকেই মনের মধ্যে একরকম জেদ চেপে বসে ‘আমি অভিনেতা হবো’।

নামের শেষে ‘হাসো’ উপাধি কিভাবে জানতে চাইলে এমরান বলেন- এনটিভির হা-শো শেষ করে গ্রামে ফিরে যাই। কিন্তু মন পড়ে থাকে টিভির পর্দায়। তখন থেকে আমাকে অনেকে হা-শো বলে ডাকে। আর আমিও তখন নামের শেষে হা-শো রেখে দেই। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় চলে আসি। তখন থেকে টুকটাক কাজ করি।

একান্ত আলাপচারিতায়  তিনি বলেন, ২০১৭ সালে প্রথম সিনেমায় অভিনয় করি। একই বছর দুটো নাটকে কাজ করি। তবে ২০১৮ শেষের দিক থেকে নিয়মিত কাজ করা।

সংখ্যার বিচারে তার অর্জনের ফিরিস্তি দিয়ে এমরান বলেন, সম্প্রতি তার অভিনীত শততম নাটক প্রচারিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬টি সিনেমায় কাজ করা হয়েছে। এয়াড়াও দুটি ওয়েব সিরিজ, একটি টিভিসি এবং একটি ওভিসিতে কাজ করা হয়েছে। সম্প্রতি ব্যস্ত আছেন সৈকত নাসিরের ‘নেটওয়ার্ক’ সিনেমার কাজ নিয়ে। ইতোমধ্যেই তিনি শত নাটকে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। 

হাতে রয়েছে মুক্তিপ্রতিক্ষিত এম রাহীমের পরিচালনায় ‘শান’ সিনেমাটি। তার ভাষায় এ ছবিতে অভিনয়ের বেশ স্পেস পেয়েছি, আশা করছি দর্শক ইমরান হাসোকে অন্যভাবে দেখতে পাবেন। এছাড়াও সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’ সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। হতে পারে এটি আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং সিনেমা- এমন আশাবাদ ইমরান হাসোর। 

থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে অনার্স পড়ুয়া ইমরান হাসো অনেক দূর যেতে চান। অভিনয়গুণে দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী আসন পেতে চান। কাজটি যেমন সহজ নয়; তেমনি অধরাও নয়। সেই লক্ষ্যে মনোযোগী পড়াশোনাতে তেমনি অভিনয়ে। নির্মাতাদের ভাষ্য- ‘ওর অভিনয়ে বৈচিত্র্য রয়েছে, লেগে থাকলে অনেক দূর যাবে’।

সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন তিনি তার জন্মদিনে যারা অভিনন্দন ও ক্ষুদে বার্তা দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন   

এলাকা এবং এলাকার বাহিরে সকল ভক্তবৃন্দ সহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন  এই অভিনেতা।