বান্দরবানের রুমায় মেম্বার পদে ১ভোটে জয়ী আবু বক্কর

আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি
আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ন, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মাত্র ১ভোটে চমক দেখালেন মোহাম্মদ আবু বক্কর। 

তৃতীয় ধাপে নির্বাচন কমিশনের ঘোষনা অনুযায়ী গত ২৮নভেম্বর রুমায় ইউনিয়ন পরিষদ অনুষ্ঠিত হয়। রুমা সদর ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী হন ৪জন। তাদের মধ্য থেকে মাত্র ১টি ভোটের ব্যবধানে মেম্বার পদটি ছিনিয়ে নিলেন যুবনেতা আবু বক্কর।

প্রার্থী ৪জনের মধ্যে মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু বক্কর ফুটবল প্রতীক পান-২১৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও বর্তমান মেম্বার উহ্লামং মারমা বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক পান-২১২ ভোট। ১নং ওয়ার্ডের নারী-পুরুষ মোট ভোটার সংখ্যা ছিল-৯৪৯। আবু বক্কর মুসলিম পাড়ার প্রয়াত আবুল কাসেমের কনিষ্ঠ সন্তান।

তিনি রুমা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক।সদ্য অনুষ্ঠিত রুমায় ৪ইউনিয়নের মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের ৩৬জন মেম্বার নির্বাচিত হলেও সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে মেম্বার আবু বক্করকে নিয়ে। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ১ভোট। এখন সবার মুখে মুখে পরিচিতি পেতে শুরু করেছে ১ভোটে মেম্বার বক্কর ভাই!

স্থানীয়রা জানায়, আবু বক্কর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দুই-তিন বছর আগে থেকে স্থানীয় এলাকার মানুষের সামাজিক ও মানবসেবার কাজে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে নারীরাও যেকোন দরকারী কাজে কাছে পেতেন বক্করকে।

নবনির্বাচিত মেম্বার আবু বক্কর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনেক আগে থেকে এলাকার সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষায় সামগ্রিক ভাবে যেকোনো উন্নয়নের কাজে সহযোগিতায় ব্যস্ত ছিলাম। যেমনটা আমার প্রয়াত পিতা আবুল কাসেমও উন্নয়নের নানা কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখত। এটা স্থানীয়দের নিকট ভোটের আশীর্বাদ হয়েছে।

মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে আবু বক্কর বলেন, ২০২০সালে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসনের কঠোর লকডাউনে যখন স্থানীয়রা ঘর থেকে বের হতে পারেনি, কোনো কাজ ছিলনা। খাবারের অভাবে পড়েছিল দরিদ্র পরিবারের লোকজন। তখন প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ত্রাণ সামগ্রি বাসায় বাসায় দিয়ে এসে খাবার ব্যবস্থা করতাম। এসময় অসুস্থ হলে মুঠোফোনে কল দিত নারীরাও। তখন দিনে-রাতে কারোর অসুস্থতা খবর পেলেই সেখানে গিয়ে সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি। তাছাড়া এলাকায় স্বাস্থ্য সচেতনতা ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধসহ দীর্ঘদিন ধরে যুবাদের উচ্ছৃঙ্খলা থেকে ফিরিয়ে সৎপথে আনার কাজ করায় যুবারা তার পাশে দাড়িয়েছে।

নির্বাচনের আগে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করতে গিয়ে আবু বক্কর আরো বলেন, রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা এর সহযোগিতায় মেম্বার হবার আগে পানির সমস্যার সমাধান করে দেন। উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে মুসলিম পাড়া সিঁড়ি নির্মিত হয়েছে। সাংগঠনিক ভাবে আবু বক্কর রুমা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ সুবাদে তাঁর ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজ সামনে আগাতে পারবেন বলে বক্করের বিশ্বাস।

এদিকে মেম্বার আবু বক্কর বলেন, গরীব মানুষের জন্য সরকারের দেয়া ত্রাণ নয়-ছয় না করে হক দরিদ্রদের মাঝে বন্টনের আপ্রাণ চেষ্টা চালাবো। ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্কভতা, প্রতিবন্ধী, মাতৃদুগ্ধ ও বিধবা ভাতা প্রদানের তালিকাভূক্তির কাজেও কোনো সুযোগ সুবিধা নেবেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি।