স্থায়ী বসার জায়গার অভাবে বিপাকে সাপাহারের চর্মকাররা

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:১০ অপরাহ্ন, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১:০১ অপরাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

কখনো প্রখর রোদের দাবদাহ! কখনোবা অঝোর ধারায় বৃষ্টি। একটি মাত্র ছাতাকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে মাথা নিচু করে জুতা সেলাইয়ে ব্যস্ত! এমনটাই দৃশ্য চোখে পড়ে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জিরোপয়েন্টস্থ মুক্তমঞ্চের সামনে। এভাবেই খোলা আকাশের নিচে কাজ করছেন চর্মকাররা (মুচি)। একটি নির্দিষ্ট স্থানের অভাবে খোলা আকাশের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এভাবেই জীবন যুদ্ধ করে চলেছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি মাত্র ছাতা ও নিজের জিনিসপত্র রাখার বাক্সকে পুঁজি করে খোলা আকাশের নিচে বসে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছেন চর্মকারগণ। এতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে চরম বিপাকে পড়তে হয় তাদের। সারাদিন কষ্ট করে জুতা সেলাই করে দুই থেকে আড়াই শ’ টাকা আয় করেন তারা। কিন্তু চৈত্রের প্রখর দাবদাহ সহ প্রতিকূল আবহাওয়ায় ঠিকমতো বসতে না পারার কারণে সেই আয় থেকেও বঞ্চিত হন তারা। এই উপজেলায় মোট ২০/২৫ জন চর্মকার জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে তারা সবাই খোলা আকাশের নিচেই কাজ করেন।

চর্মকার তীলচাঁদ বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর যাবত জুতা সেলাইয়ের কাজ করে আসছি। প্রথমে ভ্রাম্যমান অবস্থায় জুতা সেলাই করতাম। কিন্তু বর্তমানে বয়স বাড়ার কারণে আর গ্রামে গ্রামে গিয়ে জুতা সেলাই করতে পারিনা । যার ফলে এভাবেই যত্রতত্র বসে জুতা সেলাই করতে হয়। কিন্তু খোলা আকাশের নিচে এভাবে বসে কাজ করা খুবই কষ্টকর। যদি স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ বা প্রশাসনিক ভাবে আমাদের একটা নির্দিষ্ট বসার জায়গা করে দেওয়া হতো তাহলে হয়তো স্বস্তিতে কাজ করতে পারতাম।  

চর্মকার শ্রী নান্টু বলেন, আমি প্রায় ৪০/৪২ বছর যাবত জুতা সেলাইয়ের কাজ করছি। বর্তমানে সদরে বসে জুতা সেলাইয়ের কাজ করি। শীতের দিনে কাজ করতে তেমন কষ্ট না হলেও গরমকালে ও বর্ষাকালে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হয়। যার কারনে আমাদের আয় কমে যায়। এতে করে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়তে হয় আমাদের।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চর্মকারেরা ইতিমধ্যে আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। আমি স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ ও মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলে তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানের ব্যাবস্থা করার চেষ্টা করবো।

সব মিলিয়ে চর্মকারদের এহেন দুর্দশায় একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসার জায়গা করে দিতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় নের্তৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।