লালমনিরহাটে ‘গাছবন্ধু’ হিসেবে উপাধি পেলো হাতীবান্ধার আব্দুর রাজ্জাক
ভারসম্য রক্ষায় সবুজ পৃথিবী গড়তে নিজ অর্থায়ণে, স্বেচ্ছা শ্রমে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গাছ লাগিয়ে আসছেন লালমনিরহাটের আব্দুর রাজ্জাক ওরফে মিজানুর রহমান। তিনি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না গ্রামের নুরুল হক ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (রাজ্জাক) (৩৮)। বি এ পাস মিজানুর রহমান পেশায় কৃষক। বিবাহিত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক।
বাবা নুরুল হক গাছের চারা বিতরণ ও রোপনের কাজে তাকে উৎসাহিত করেছেন। সিন্দুর্না গ্রামে নিজ বাড়িতে সাত শতাংশ জমির ওপর “সবুজ পৃথিবী বাঁচাও’’ নামে একটি নার্সারি আছে মিজানুরের। ২০০৬ সাল থেকে নিজ খরচে গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে গাছ রোপণ করে স্থানীয় মানুষের কাছে ‘গাছবন্ধু’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। মিজানুরের দাবি, তার রেপণ করা গাছের সংখ্যা ১লাখ ২৬ হাজার।
তার এমন কাজের স্বীকৃতি হিবেবে গত বছর প্রথম আলোর ২৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মিজানুরকে সম্মাননা দেয় বন্ধুসভা। মিজানুর রহমান বলেন, মানুষ তাকে দেখলে গাছবন্ধু বলে ডাকেন। এটাই তার সম্মান ও স্বীকৃতি। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না গ্রামের তিস্তাঘাট রোড থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের সারি। ১৫ বছর বয়সী এসব গাছে বিভিন্ন মৌসুমে ফুল ও ফল ধরে। গাছের নিচ দিয়ে পথচলার সময় কানে ভেসে আসে পাখির ডাক।
২০০৬ সালে এ সড়কে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সিংগিমারী, সিন্দুর্না, টংভাঙ্গা, পাটিকাপাড়া, ভেলাগুড়ি, গোতামারী, গড্ডিমারী, কালীগঞ্জ থানার দলগ্রাম, পাটগ্রাম থানার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা এছাড়া পাশের জেলা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের চত্বরে তিনি গাছ লাগিয়েছেন।
মিজানুর বহমান বলেন, নিজের আয় ও টিউশনির টাকার একাংশ দিয়ে তিনি গাছ কেনেন। কখনো কখনো কাছের আত্মীয় স্বজন ও গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করেন। মিজানুরের স্ত্রী জিন্নাত রোকসানা বলেন, এর সঙ্গে তারাও জড়িয়ে গেছেন। এলাকা ঘুরে বিভিন্ন জনের কাছথেকে জানাযায়, সবাই তাকে গাছবন্ধু বলে ডাকে। এরখম গাছপ্রেমী মানুষ খুজে পাওয়া বিড়ল।
এ ব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান এই মিজানুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের চারা রোপন ও বিনামূল্যে বিতরণ করে আসছেন। অত্র উপজেলায় তার এ ধরনের উদ্যেকে সাধুবাদ জানান তারা।
