সাপাহারে ঢিলেঢালা ভাবে চলছে কামারদের ব্যবসা!

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ন, ১৪ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ২:২৮ অপরাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪


মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ উৎসব ঈদুল আযহার আর মাত্র কয়েকদিন বাঁকী। কিন্তু নওগাঁর সাপাহারে ঈদের আমেজ নেই কামারদের মধ্যে। করোনা মহামরীর কারণে জমে উঠছে না কোরবানি ঈদের হাট। অনলাইনে পশু ক্রয় বিক্রয় চলছে। স্থানীয় ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাট খোলা থাকলেও অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়ার ফলে কোরবানী দেবার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। আর এই প্রভাব পড়েছে স্থানীয় কামারদের মাঝে।  

উপজেলার বিভিন্ন হাটগুলোতে কোরবানির ঈদকে ঘিরে বসে নানান ধরনের লোহার তৈরী জিনিস-পত্রের। ঈদকে সামনে রেখে কামার পল্লীতে দা, ছুরি, চাপাতি,হাসুয়া নারিকেল কোরানিসহ অন্যান্য দেশীয় লোহার জিনিসপত্র তৈরির প্রবনতা নেই বললেই চলে। ঢিলেঢালা ভাবে চলছে পুরাতন অস্ত্র শান দেওয়ার কাজ। লোহার তৈরী নতুন জিনিসপত্রের চাহিদা বাজারে অন্যান্য বছরের তুলনায় খুবই কম।  যার ফলে বিপাকে পড়েছে কামাররা। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কোরবানী ঈদে তাদের আয় রোজগার বেশি হওয়ার কথা থাকলেও এবছরে নিরাশায় দিন গুনছেন স্থানীয় লোহার কারিগররা।  

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, প্রতি বছর অনেকে পুরো একটি বা সামর্থ অনুযায়ী দুইটি পর্যন্ত গরু ও খাসি কোরবানী দিতেন। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে অনেকে ভাগে কোরবানী কিনছে। যার ফলে লোহার তৈরী হাতিয়ারও কম লাগছে। অনেকে আবার পুরনো হাতিয়ার শান দিয়েই এই বছরে কাজ চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। যেকারনে কামারদের ব্যবসায় অনেকটা ভাটা পড়েছে। 

লোহা কারিগর দিলীপ কর্মকার জানান, অন্যান্য বছর কোরবানীর সময়ে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার জিনিপত্র বিক্রি হয়। কিন্তু এবছরে এখনো পর্যন্ত তিন ভাগের এত ভাগও বিক্রয় হয়নি। 

উজ্জ্বল কর্মকার বলেন, অন্যান্য বছর পুরানো জিনিসপত্র শান দেই প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার। কিন্তু চলতি বছরে এই পর্যন্ত ৪ থেকে ৫হাজার টাকারও কাজ করতে পারিনি। 

লোহা কারিগর পিন্টু কর্মকার বলেন, আমরা সারাবছর এই কোরবানীর মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি। প্রতি বছরে ভালো একটা অঙ্কের বেচাকেনা হয়। কিন্তু চলতি বছরে এই পর্যন্ত ঢিলেঢালা ভাবে চলছে বেচাকেনা। অনেকটা সময় কাজ বিহীন দোকানে বসে থাকতে হচ্ছে। 

বাজারে লোহার জিনিপত্র বেঁচতে আসা সুকুমার কর্মকার বলেন, অন্যান্য বছর কোরবানীর সময়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। কিন্তু এই বছরে প্রতিদিন মাত্র ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে।

এছাড়াও উপজেলার অনেক লোহার কারিগররা বলছেন,  করোনা মহামারীর কারনে এবার অন্যান্য ঈদের চেয়ে কাজ কম। তবে বাজারে আমদানিকৃত হাতিয়ার আসায় আমাদের তৈরি জিনিসের চাহিদা বহুগুণে কমে গেছে। যার ফলে ফলে পূর্বপুরুষদের এই পেশা ধরে রাখা দুষ্কর হবে বলেও জানান তারা।