কক্সবাজারের রামুতে ২ দিনে ২১৫ জন রোহিঙ্গা আটক

মো. সাইফুল ইসলাম খোকন,কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
মো. সাইফুল ইসলাম খোকন,কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম খোকন,কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১:৩৭ পূর্বাহ্ন, ২৮ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১:৩৭ পূর্বাহ্ন, ২৮ জুলাই ২০২১

কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়া নালা ইউনিয়ন পরিষদের বসানো চেক পোস্টে ২ দিনে ২১৫ জন রোহিঙ্গা আটক করা হয়েছে। ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে কাজের সন্ধানে যাওয়া এসব রোহিঙ্গাদের আটক করে পরবর্তীতে আবারো ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানান রামু উপজেলা প্রশাসন। দুই দিনে শুধু একটি চেকপোস্টে এত বিপুল পরিমান রোহিঙ্গা আটক হলে জেলার অন্যান্য জায়গা দিয়ে কি পরিমান রোহিঙ্গা বাইরে যাচ্ছে আর তারা কি আদৌ ফিরে আসছে কিনা ? সেটাই এখন ভেবে দেখার বিষয় বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।

রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহামদ প্রিন্স বলেন,উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা ইউনিয়নের পরিষদের পক্ষ থেকে একটি চেকপোস্ট বসিয়েছিল মূলত লকডাউন বাস্তবায়নে এই চেকপোস্ট বেশি কার্যকর হলেও গত দুই দিনে আমরা ২১৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছি। যারা প্রত্যেকে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে এসেছে। তার মধ্যে ২৫ জুলাই ৮৬ জন আর ২৬ জুলাই ১৩৯ জন। পরে তাদের রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে গত ২ দিনে এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আটকরে ঘটনায় তোড়পাড় শুরু হয়েছে এলাকাজুড়ে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ি দিদারুল আলম বলেন,একটি একটি চেকপোস্টে ২ দিনে ২১৫ জন আটক হয় তাহলে পুরু জেলায় কি পরিমান রোহিঙ্গা প্রতিদিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। আর তার মধ্যে কতজনই বা ফেরত আসছে এভাবে রোহিঙ্গারা পুরু জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে বলে তিনি দাবী করেন। রামু উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক খালেদ শহীদ বলেন,মূলত রোহিঙ্গারা এখন সব দিক থেকে বেপরোয়া,তারা বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকলে দেশের কোন আইন কানুন মানতে চায়না।

ক্যাম্পে তাদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকার পরও কেন তারা ক্যাম্প থেকে বের হচ্ছে। আর ক্যাম্পে প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তা কর্মী থাকার ও কিভাবে এসব রোহিঙ্গারা বের হয় ?। তার চেয়ে বড় কথা রোহিঙ্গারা এখন মাদক পরিহবনের সব চেয়ে নিরাপদ বাহন। তারা কোন কিছুই তোয়াক্কা করেনা। জেল পরিমানা তাদের কাছে কিছুই না। তাই কোন কিছুই তারা ভয় করেনা। ঈদগাঁও সুজন সভাপতি মনজুর আলম বলেন,প্রতিদিন অসংখ্য রোহিঙ্গা পথে ঘাটে বাজারে যাতায়ত করে,তারা আবার অনেক আগে আসা রোহিঙ্গাদের বাড়িতে থাকে,সেখানে কাজ কর্মকরে,অনেকে ফিরে যায়,আবার অনেকে চট্টগ্রাম,পটিয়ার দিকে চলে যায়,এর মধ্যে অনেকে স্থানীয় মেয়েদের সাথে বিয়ে করে স্থায়ী হয়ে যায়।

এতে সহায়তা করে আগে যারা স্থায়ী হয়েছে সে সব রোহিঙ্গা আবার টাকার লোভে অনেকে তাদের স্থায়ী করতে সহায়তা করে। এদিকে শহরের পাহাড়তলী এলাকার সমাজপতি জাফর আলম বলেন,আমাদের এলাকা হচ্ছে মিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এখানে প্রতিদিন অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা আসে,তারা এখানে তাদের পূর্বের আত্বীয় স্বজনের বাড়িতে থাকে,কাজকর্ম করে আবার কেউ ফিরে যায়,অনেকে ফিরে যায় না। এক কথায় তাদের যা ইচ্ছা তাই করে। আবার বেশির ভাগই ইয়াবা বা মদক পরিহরণ করে। সেই ইয়াবা এখানে রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়রা ভাগাভাগি করে বিক্রি করে।

এদিকে জোয়ারিয়ানালায় রোহিঙ্গা আটকের বিষয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা বলেন,জোয়ারিয়ানালা চেকপোস্টে আটক হওয়া রোহিঙ্গারা প্রত্যেকে ক্যাম্পের বাসিন্দা,তারা মূলত শ্রম দেওয়ার জন্য বা কাজ করার জন্য চট্টগ্রাম,পটিয়া,সাতকানিয়া সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিল। পরে তাদের ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।