মাটিরাঙ্গার তাইন্দং এ প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে আনন্দিত ৪১পরিবার

আব্দুল্লাহ আল মামুন,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি
আব্দুল্লাহ আল মামুন,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১২:৩০ অপরাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২১

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার অপরাপর ইউনিয়ন গুলির ন্যয় তাইন্দং এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে প্রতিবন্ধী, বিধবাসহ৷ গৃহহীন পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বপ্নের ঠিকানা পেয়ে আনন্দিত।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সার্বিক তদারকিতে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় স্বপ্নের ঠিকানা পেলো অসহায় পরিবারগুলো। 

বুধবার(২৮ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়,

উপজেলার ১নং তাইন্দং ইউনিয়নে হতদরিদ্র, দুস্থ প্রতিবন্ধী, স্বামীহারা বিধবা নারীসহ ৪১টি অসহায় হতদরিদ্র গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পেয়েছে তাদের স্বপ্নের ঠিকানা। এসময়, ১৩টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান দেখা গেছে, ২৮টি ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় সুবিধা ভোগীদেরকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেয়ায় সুবিধা ভোগীরা পরিবার পরিজন নিয়ে পরম সুখে বসবাস করছে। 

এ দুর্গম এলাকার অসহায় মানুষদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পৌঁছে দিয়েছে প্রশাসন। 

তার মধ্যে উল্লেখয়োগ্য ভারতের সীমান্তবর্তী তাইন্দং ইউনিয়নের প্রত্যন্ত বগা পাড়া, সর্বশ্ব পাড়া, হেডম্যান পাড়া, পোড়াবাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকটি ত্রিপুরা পরিবারে ঘর নির্মাণে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের আন্তরিকতাপূর্ণ প্রচেষ্টা। গৃহ নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের বিকল্প ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে তাইন্দং বাজার থেকে প্রায় ৮কিলোমিটার দূরবর্তী দূর্গম পাহাড়ি পথ পারি দিয়ে এসকল চাকমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের পরিবারদের আশ্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ করে দেয় হয়েছে যা প্রশংসার দাবিদার। 

১নং তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের পোড়াবাড়ি গ্রামের উপকারভোগী সমিনী ত্রিপুরা অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, সরকারি ঘর পেয়ে তিনি খুবই আনন্দিত। দূর্গম এলাকার হত-দরিদ্র পরিবারটি পাকা ঘর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। 

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে সীমান্তবর্তী এলাকা বগা পাড়ার মিঠুন চাকমা, সর্বশ্ব পাড়ার যাদুয়া চাকমা, হেডম্যান পাড়ার সুন্দর বিকাশ ত্রিপুরা, বরংমালা ত্রিপুরা, আমতলা এলাকার জয়নাল, দক্ষিণ মাচালং এলাকার এরশাদ, ইউসুফ, জামাল, মেহেদী হাসানসহ একাধিক উপকারভোগী জানান, সারাজীবনের চেষ্টায়ও তারা মাথা গোজার কোন ঠাঁই করতে পারেননি, এমতাবস্থায় স্বপ্নের সেই বসত ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা, আন্তরের অন্তস্থল থেকে দোওয়া ও দীর্ঘায়ূ কামনা করেছেন তারা। 

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজ কুমার শীল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২০টি এবং ২য় ধাপে ৫৯টি  তৃতীয় ধাপে ৫০টি চতুর্থ ধাপে  ৯০টি মোট ২১৯টি ঘর স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন। 

তদারকি কর্মকর্তাদের যাচাই-বাচাইয়ের মাধ্যমে হতদরিদ্র, দুস্থ, প্রতিবন্ধী, বিধবাদের অগ্রধিকার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংসহ ৭টি ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির তত্বাবধানে ঘরগুলো অত্যন্ত মানসম্মতভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান। 

১নং তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন,

বিভিন্ন সময়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংসহ অন্যান্য ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এসমস্ত উপহার ঘরগুলো পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকবৃন্দ, তারা সকলেই ঘরগুলোর গুণগত মান নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

তিনি আরো বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষরা কোথায় থাকতো, কিভাবে দিন কাটাতো তাদের সে সকল কষ্টের কথা চিন্তা করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটির ফল আজ ভোগ করছেন পাহাড়ের গৃহহীন অসহায় এসকল মানুষেরা।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর মাটিরাঙ্গা উপজেলাতেও এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে বিতরণের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।