ফুলতিকে হত্যা নয় বরং দুর্নাম রটিয়ে বিয়ে ভাঙাই ছিল মূল টার্গেট, আসামী শাখাওয়াতের স্বীকারোক্তি

আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ন, ০৩ অগাস্ট ২০২১ | আপডেট: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, ১৮ মে ২০২৪

রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের দিনে ছুরিকাঘাতে মাদরাসা ছাত্রী তারমিনা আক্তার ফুলতি হত্যাকান্ডে আসল কারণ জানিয়েছেন ঐ মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসমী শাখাওয়াত হোসেন (১৮)।

এসময় তিনি পুলিশকে বলেন ফুলতিকে হত্যা করা আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল না বরং সাময়িক দুর্নাম রটিয়ে তার বিয়ে ভাঙ্গাই ছিল টার্গেট। কিন্তু ঘটনার সময় হঠাৎ করে ক্ষোভের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তিনি ফুলতিকে একাধিক আঘাত করেন। এরপর বিয়ের দিনই মুমুর্ষ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে হেরে যান তারমিনা আক্তার ফুলতি । 

এঘটনায় ঘাতক শাখাওয়াতকে আটক করে মঙ্গলবার (০৩ আগষ্ট) বিকেলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে গত ২৮ জুলাই রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানো গ্রাম বিয়ের দিন সকালে তারমিনাকে ছুরিকাঘাত করেন শাখাওয়াত। পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তারমিনা আক্তার ফুলতির মামা বাদী হয়ে গত ২৯ জুলাই অভিযুক্ত শাখাওয়াত হোসেনকে আসামী করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলা হত্যা মামলায় পরিবর্তন করা হয়। মামলার পর ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সোমবার (০২ আগষ্ট) গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে পলাতক শাখাওয়াত হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘাতক শাখাওয়াত হোসেন মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান পশ্চিম গ্রামের মোনায়েম হোসেনের ছেলে।

অনুসন্ধানে জানা যায়- মিঠাপুকুরের ছড়ান পশ্চিম বড়বালা এলাকায় তারমিনার বড় বোনের বিয়ে হয়। সেই দিক দিয়ে তারমিনার দূর সম্পর্কের আত্নীয় হয়েছিলেন শাখাওয়াত। সেই সুবাদে শাখাওয়াত বিভিন্ন সময় তারমিনাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন, কিন্তু তারমিনা রাজি হননি। এরই মধ্যে পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৮ জুলাই অন্যত্র তারমিনার বিয়ের দিন ধার্য হয়েছিল। এর জেরেই ওইদিন সকাল তারমিনার বাড়িতে গিয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেন শাখাওয়াত।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাখাওয়াত বলেন, “আমি মনে প্রাণে তারমিনাকে ভালোবাসতাম, তার বিয়ে ঠিক হওয়ার কথা শুনে আমার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিয়ে ভাঙ্গা ছিল আমার প্রধান টার্গেট । এ কারণে হালকাভাবে তার হাতে ছুরি দিয়ে কোপ দিতে চেয়েছিলাম। এতে বর পক্ষ ভাবতো আমার সঙ্গে তারমিনার প্রেম আছে। এ দূর্নাম রটলে বিয়ে ভাঙবে। কিন্তু কিভাবে তাকে আমি একাধিক কুপিয়েছি তা আর বলতে পারছি না।”

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন- আমাদের উর্ধ্বতন অফিসারগণের নির্দেশক্রমে তাদের সহায়তায় পুলিশের যৌথ অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে আসামী শাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারের পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার জন্য তাকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসমী এসব তথ্য প্রদান করেছেন।