পীরগাছায় গাছের বুকে পেরেক মেরে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার

একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:৪৫ অপরাহ্ন, ১৮ অগাস্ট ২০২১ | আপডেট: ১০:৪৫ অপরাহ্ন, ১৮ অগাস্ট ২০২১

রংপুরের পীরগাছায় রাস্তার দুপাশে গাছে গাছে পেরেক মেরে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ফলে গাছের জীবনী শক্তি দুর্বল হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন উদ্ভিদবিদরা। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের ভূমিকা অপরিসীম। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রচার-প্রচারণা করছেন। সেই সঙ্গে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় এসব সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে গাছে গাছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পাকারমাথা বাজার, মডেল স্কুল, উপজেলা গেইট, বটতলা বাজার, থানা রোড, হাইস্কুল রোড, স্টেশন রোড, ইউনিয়ন পরিষদ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তার ধারে দুপাশের গাছে গাছে পেরেক ঢুকানো সাইনবোর্ড দেখা যায়।

সাইনবোর্ডগুলো অধিকাংশ কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট পড়ানো, কোম্পানির বিজ্ঞাপন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন, হারবাল চিকিৎসার বিজ্ঞাপন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠনের বিজ্ঞাপন ও রাজনৈতিক ব্যক্তির প্রচারণা সম্বলিত সাইনবোর্ড।

এ বিষয়ে পীরগাছা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মো. মশিয়ার রহমান বলেন, গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড লাগানো গাছের জন্য ক্ষতিকর। পেরেক লাগায় গাছ থেকে রস নির্গত হওয়ার ফলে গাছের মারাত্মক ক্ষতি হয়।

প্রাণি পল্লী চিকিৎসক সুখদেব চন্দ্র বলেন, গাছেরও প্রাণ আছে। আমাদের আঘাত করলে যেমন আমরা ব্যথা পাই তেমনি গাছও ব্যথা পায়। গাছে পেরেক মারা মোটেও ঠিক নয়।  

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গাছের তিনটি টিস্যু স্তর আছে। গাছের বুকে পেরেক মারার ফলে গাছগুলো কালো আকার ধারণ করে। উদ্ভিদের সরবরাহ টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মাটি থেকে পানি ও খনিজ লবণ সঠিকভাবে শোষণ করতে পারেনা। উদ্ভিদ যে খাদ্য তৈরি করে তা সমস্ত সজিব অঙ্গে পরিবাহিত হতে বাধা প্রাপ্ত হয়। এতে উদ্ভিদের বৃদ্ধি হ্রাস পায়। ফলে গাছের খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এক সময় গাছটি মারা যায়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মো. মাহবুবার রহমান এ বিষয়ে জানান, রাতের আধারে কে বা কারা এসব সাইনবোর্ড লাগায় তা চিহ্নিত করা মুশকিল। তবে ভবিষ্যতে যাতে গাছে পেরেক মেরে সাইনবোর্ড না লাগায় এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, গাছে পেরেক মেরে গাছের যেমন ক্ষতি করছে তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।