রসিকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কাজ সম্পন্ন

আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি আপেল মাহমুদ, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৫৭ অপরাহ্ন, ২৩ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১১:৫৭ অপরাহ্ন, ২৩ জুলাই ২০২১

পূর্বঘোষিত ১২ ঘণ্টার আগেই রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সব এলাকা থেকে প্রথম দিনের কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করেছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন  । ঈদের দিন বেলা দুইটা থেকে রাত বারোটার মধ্যেই বর্জ্য অপসারণ করে তা নির্ধারিত স্থানে ডাম্পিং করা হয়। নগরবাসীসহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হওয়াতে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

শুক্রবার (২৩ জুলাই) সাংবাদিকদের সাথে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি নগরবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এর আগে বুধবার (২১ জুলাই) মেয়র ঘোষণা দেন যে, কোরবানির দিন ১২টার মধ্যে রংপুর সিটি করপোরেশনের সব এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখতে মেয়র নিজেই রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য ও ডাম্পিংসহ সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মোস্তাফিজার রহমান বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সবার আন্তরিক সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। রসিকের তিনটি অঞ্চলের ৩৩টি ওয়ার্ডে ঈদের জন্য নেওয়া বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মোট ১ হাজার ৩৭ কর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ কাজে আমরা সফল হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, সিটির ১ হাজার ৩৭ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী তিনটি জোনে বিভক্ত হয়ে বর্জ্য অপসারণে কাজ করেছে। এতে ১২০টি ট্রলি ও রিকশা-ভ্যান এবং ২৯টি ডাম্প ট্রাক ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও পশুর বর্জ্য অপসারণ কাজে হুইল লোডার, ব্যাকো লোডার, স্পিড লোডার, স্কাভেটর ও পানিবাহী গাড়ি ছিল। তিন জোনে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম মনিটরিং করতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি ছাড়াও কাউন্সিলরগণসহ  একটি মনিটরিং টিম কাজ করেছে। কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে নগরবাসীকে সহায়তা দিতে নগর ভবনে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়। সকলের আন্তরিক সহযোগিতা, দায়িত্ববোধ ও সচেতনতার কারণে ১২ ঘণ্টার আগেই বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অঞ্চল-১) মিজানুর রহমান মিজু জানান, ঈদের দিন কোরবানির পশুর ২০০ টন বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেদিন বেলা ২টা থেকে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করা হয়। রাত ১২ টার মধ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ বেশির ভাগ এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়। সিটি মেয়র ঘোষিত ১২ ঘণ্টার আগেই ১৭০ টনের বেশি বর্জ্য অপসারণ করে তা ডাম্পিং করতে নির্দিষ্ট স্থানে নেওয়া হয়।  

শুক্রবার সকালে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর টার্মিনাল রোড চামড়াপট্টি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশনের পানিবাহি গাড়ি থেকে জীবণানাশক পানি ছিটানোর পাশাপাশি ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বিভিন্ন পাড়ামহল্লার ডাস্টবিন থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোরবানির পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে বা স্তুপ করে রাখতে দেখা যায়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করায় মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সচেতন মহল।

রংপুর নগরীর নিউ আদর্শপাড়া এলাকার সরকারি চাকরিজীবি মাহফুজার রহমান বলেন, সিটির মেয়র তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন। আমরা আনন্দিত। দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্যমুক্ত পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেওয়ার জন্য। এজন্য মেয়র মহোদয়কেসহ সকল পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

তাজহাট আনছারীর মোড় এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক শরীফুজ্জামান বুলু বলেন, ঈদের দিনে আমাদের অনেকেই সড়কের উপর, বাড়ির পাশে কোরবানির পশু জবাই করেছে। ভেবেছিলাম, বিকেলের পর বর্জ্য অপসারণ না হলে দুর্গন্ধে থাকা যাবে না। কিন্তু সন্ধ্যার আগেই সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বর্জ্য অপসারণ করে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেন। এতে দুর্গন্ধমুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।

এদিকে ঈদের তৃতীয় দিনেও বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশু জবাই করতে দেখা যায়। এসবের বর্জ্য অপসারণে সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহাবুবার রহমান মঞ্জু, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিভাগের (কঞ্জারভেন্সি শাখা) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিজু, শাহিনুর রহমান শাহিন, হাসান রাফির নেতৃত্বে একটি মনিটরিং টিম ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মাঠে কাজ করেন।