ধামইরহাটের জাহানপুরে ৫ যুগ ধরে রাস্তা পায়নি মাষ্টার পাড়া ও মজিবর পাড়ার দুই শতাধিক বাসিন্দা

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩:৩৪ অপরাহ্ন, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ন্যায় নওগাঁর ধামইরহাটে উন্নয়ন অগ্রযাত্রাই অতীতের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবুও যেন নিন্দার শেষ নেয়, আসলে ২/১ টি জায়গাতে নাকাল অবস্থাও দেখা গেছে, প্রকৃত পক্ষে এর জন্য দায়ী দায়িত্বশীল স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। রাস্তা না থাকায় রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা, ছেলে -মেয়েদের মান সম্মত লেখাপড়াতেও বিঘœ ঘটছে। এমন একটি নিদারুন কস্টের ঘটনা উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নে।


সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত মাস্টারপাড়া ও মজিবর পাড়ায় বসবাস করে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার। জমির আইল বা ডগর দিয়েই চলাচল করতো ওই এলাকার বাসীন্দারা। কালের বিবর্তনে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও আজ অবধি কোন রাস্তা পায়নি দুটি পাড়ার জনগণ, পেয়েছে শুধু মেম্বার-চেয়ারম্যানদের প্রতিশ্রুতি। বর্তমান বর্ষাকালে এক পশলা বৃষ্টি হলেই দেড় ফিটের সরু চিকন আইল দিয়ে হাটতে গিয়ে মাস্টারপাড়া ও মজিবর পাড়ার লোকজনের পড়ে চরম ভোগান্তিতে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান জানান, আমরা ১৯৫৬ সাল থেকে এই গ্রামে বসবাস করছি,রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, বর্ষায় কাদা-পানিতে বাড়ীর বাহির হওয়া যায় না, রাস্তা না থাকায় গ্রামের মেয়েদের বিয়ে সাধীও ঠিক মত দেয়া যায় না।


ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী কাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আরমান ও মঙ্গলবাড়ী শহীদ আব্দুল জোব্বার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অপর শিক্ষার্থী মির্জাতুন নাহার জানান, বর্ষাকালে বই নিয়ে স্কুলে যাওয়া যায় না, কাদাপানিতে ভিজে যায়, ক্লাস মিস হয়।
স্থানীয় ৮০ বছর বয়সী হুরমত আলী কাদো কাদো কণ্ঠে বলেন, ‘বাবারা একটা ভ্যান রিক্সা তো দুরের কথা হুন্ডা (মোটরসাইকেল)নিয়েও যাওয়া যায়না।’ দুটি গ্রামের লোকজনের বাহির হওয়ার মত কোন রাস্তা নেই, বর্ষাকালে এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হলে, গৃহবন্ধী থাকতে হয় পরিবারের সবাইকে, ফলে তারা খুবই কস্টে জীবন যাপন করে।
৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার রশিদুল সাংবাদিকদের উপস্থিতি জেনেও উপস্থিত হননি, তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, ‘এই এলাকায় জমির মাালিক  গোলজার, আকবর আলী, কুদ্দুস ও  সামসুলসহ সবাইকে সাথে নিয়ে বৈঠক করেছি, আমি ৮০ হাজার টাকার মত জমিওয়ালাদের দিতেও চেয়েছি, কিন্তু তারা কেউ রাস্তা দিতে সম্মত হয়না জন্যই দীর্ঘদিনের পুরোনো দুটি পাড়ার মাঝখানে রাস্তাটি করা সম্ভব হয়নি।


এ ব্যাপারে ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন বলেন, প্রথমে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দৃশ্যমান রাস্তার অবকাঠামো তৈরী হতে হবে, স্থানীয় ৪০ দিনের কর্মসূচি দিয়েও সেটা করা যেতে পারে, তার পর উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সরেজমিন পরিদর্শণ করে একটি আইডির মাধ্যমে রাস্তার উন্নয়ন কাজ করে দেয়া সম্ভব, নচেত সম্ভব নয়।